মার্কিন প্রতিনিধিপরিষদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দ্বিতীয় দফায় অভিশংসন করা হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো প্রেসিডেন্ট নজিরবিহীনভাবে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসনের শিকার হলেন।
বুধবার প্রতিনিধি পরিষদে ২৩২-১৯৭ ভোটে অভিশংসন প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
ভোটাভুটির পর প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্রেটিক স্পীকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, আজ প্রমাণিত হলো কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। এমনকি আমেরিকার প্রেসিডেন্টও নন।
মার্কিন কংগ্রেসের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুযায়ী প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া অভিশংসন প্রস্তাবটি সিনেটে যাওয়ার কথা। কিন্তু সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতা মিচম্যাককনেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রস্তাবটি ২০ জানুয়ারির আগে অর্থাৎ ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সিনেটে আলোচনায় আসবেনা।
তিনি বলেছেন, দেশের জন্য এখন নতুন প্রশাসনের ক্ষমতা গ্রহণ প্রক্রিয়া মসৃণ হওয়াটাই দরকার। দেশের স্বার্থে প্রতিনিধি পরিষদে গৃহীত অভিশংসন প্রস্তাবটি নিয়ে সিনেটে আলোচনায় হবে ট্রাম্প ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর।
এর অর্থ মেয়াদ শেষের আগে ক্ষমতা হারানো থেকে রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শপথ নেবেন। দায়িত্ব নেবে নতুন সরকার। কিন্তু নতুন সরকার আসার পরেও ট্রাম্প যদি সিনেটেও দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
এদিকে প্রতিনিধি পরিষদের অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিজ দলের ১০ জন আইন প্রণেতা এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপে এর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এর আগে ২০১৯ সালে ইউক্রেন কেলেঙ্কারির কারণে কংগ্রেসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রথম দফায় অভিশংসন করা হয়েছিল।
গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন পার্লামেন্টে জো বাইডেনের বিজয়কে সার্টিফাই করার সময়ে ট্রাম্পের আহ্বানে ওয়াশিংটনডিসিতে জড়ো হওয়া সমর্থকরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায়। এতে ৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর পর পরই স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির নেতৃত্বে খুব দ্রুত অভিশংসন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
এদিকে ২০ জানুয়ারি জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান ঘিরে আরো হামলার আশংকায় শুধু ওয়াশিংটন ডিসিই নয়, আশে পাশের এলাকায়ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই সড়ক সমূহে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। ২০ হাজার ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য এবং অন্তত আটটি রাজ্য থেকে পুলিশের চৌকস দল ওয়াশিংটনে অবস্থান নিয়েছে। নিউইয়র্ক থেকেই যোগ দিচ্ছে ২শ’ পুলিশের দল।
এদিকে ট্রাম্প তার এক ভিডিও বার্তায় অভিশংসনের কোন কথা উল্লেখ না করে সহিসংতা এড়িয়ে আমেরিকানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনিবলেন, ‘সহিংসতার কোন যুক্তি নেই, কোন অজুহাত নেই। আমেরিকা আইনের দেশ’।
জো বাইডেন এক বিবৃতিতে সিনেটের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আমি আশা করি অভিশংসনের ক্ষেত্রে সিনেট নেতৃত্ব তাদেও সাংবিধবানিক দায়িত্ব পালনে একটি উপায় খুঁজে পাবে। একই সঙ্গে দেশের অন্যান্য জরুরি বিষয়েও কাজ করে যাবে’।