যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলে হামলার উস্কানিদাতার অভিযোগ থেকে শনিবার রেহাই পেয়েছেন।
সিনেটের অভিশংসন আদালতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ট্রাম্পকে দন্ড দেওয়ার পক্ষে ভোট দিলেও তিনি সাংবিধানিক আইনে রেহাই পেয়ে যান।
দন্ডিত হওয়ার জন্য সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোট দরকার। অভিশংসন আদালতের চূড়ান্ত ৫৭-৪৩ ভোটের মাধ্যমে দন্ড থেকে আবারো রেহাই পেলেন ট্রাম্প।
আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকার উজ্জ্বল ও সীমাহীন সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে দ্রুতই তিনি ফিরে আসবেন।
২০ জানুয়ারির পর থেকে পরিবার নিয়ে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে অবস্থান করছেন ট্রাম্প। অভিশংসন দন্ড থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ট্রাম্প শিগগিরই রাজনৈতিক মঞ্চে ফিরে আসবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে হামলায় উস্কানির অভিযোগে প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এরপর ৯ ফেব্রুয়ারি সিনেটে অভিশংসন আদালতের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
কিন্তু রিপাবলিকান সিনেটরদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সদস্যের ভোট না পাওয়ায় বিচারে ট্রাম্পকে দন্ডিত করা যায়নি। আগেই এমনটা ধারণা করা হয়েছিল।
রিপাবলিকান সিনেটরদের বেশির ভাগই ট্রাম্প বলয়ের বাইরে গিয়ে এই অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেবেন না বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল।
গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার জন্য দায়ী করে আনা অভিযোগ অভিশংসনযোগ্য বলে ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। ট্রাম্পের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা এসব যুক্তি খন্ডন করেন।
অভিশংসন বিচারের জন্য মার্কিন সিনেটের ১শ সদস্যই শপথ নিয়ে তাতে অংশগ্রহণ করেন।
সাতজন রিপাবলিকান সিনেটর ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাঁরা হলেন সিনেটর রিচার্ড বার, বিল কেসেডি, সুজান কলিন্স, লিসা মারকাউস্কি, মিট রমনি, বেন সাসেই ও প্যাট টোমি।
কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ১০ জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ভোট দিয়েছিলেন।
তবে সিনেট বিচারে দন্ড কার্যকর করার জন্য ১৭ জন রিপাবলিকান সিনেটরের সমর্থনের প্রয়োজন ছিল।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এক বিবৃতিতে রিপাবলিকান যেসব সিনেটর ট্রাম্পকে দন্ড দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
পাঁচ দিনব্যাপী চলা অভিশংসন আদালতে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান অভিশংসন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কংগ্রেসম্যান জ্যামি রাস্কিন।
৬ জানুয়ারির ঘটনার আগের দিন নিজের অকালপ্রয়াত ছেলেকে সমাহিত করে এসে মেয়ে-জামাতাসহ ক্যাপিটল হিলের হুলস্থ’ুলে পড়া নিয়ে জ্যামি রাস্কিনের আবেগঘন বক্তব্য আমেরিকার সাধারণ লোকজনকে স্পর্শ করেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও জ্যামি রাস্কিনকে অভিশংসন আদালতের নায়ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালে ইউক্রেন কেলেঙ্কারির কারণে কংগ্রেসের নি¤œকক্ষে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রথম দফায় অভিশংসিত করা হয়েছিল। কিন্তু সে সময়ও তিনি সিনেটে রেহাই পেয়ে যান।
এবারে যদি তিনি দন্ডিত হতেন তাহলে আর কোন নির্বাচনে অংশ নিতে পারতেন না।