ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোকে বলেন, ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি রক্ষার ব্যাপারে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সাথে আলোচনায় অবশ্যই তেহরানের ‘অধিকার’ রক্ষার নিশ্চয়তা থাকতে হবে। খবর এএফপি’র।
ইরানের প্রেসিডেন্ট দপ্তরের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘণ্টাব্যাপী ফোনালাপে রাইসি বলেন, ‘যেকোন আলোচনায় ইরানের জনগণের অধিকার সমুন্নত এবং আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষার নিশ্চয়তা থাকতে হবে।’
গত সপ্তাহে ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পশ্চিমা কোন দেশের নেতার সাথে এটি হচ্ছে রাইসির প্রথম ফোনালাপ।
রাইসি হাসান রুহানির কাছ থেকে দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে ইরানের মধ্যপন্থী নেতা রুহানির সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি। আর এ আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় ইরানের পরমাণবিক কর্মসূচি সীমাবদ্ধ রাখার বিনিময়ে তেহরানের ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ চুক্তি থেকে একতরফাভাবে ওয়াশিংটনকে প্রত্যাহার করে নেয়ার মাধ্যমে তা বানচাল করে দেন এবং তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
চুক্তিটি রক্ষা প্রচেষ্টায় গত এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ভিয়েনায় ইরান ও বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর মধ্যে ইতোমধ্যে ছয় দফা পরমাণু আলোচনা হয়েছে। গত ২০ জুন সর্বশেষ দফার আলোচনা হয়। তবে এখন পর্যন্ত নতুন দফার আলোচনার তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।
এদিকে ইরানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের আগে আর কোন আলোচানা হবে না। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক কর্মকর্তা সপ্তাহান্তে জানান, সেপ্টেম্বর মাসের গোড়ার দিকে ফের আলোচনা শুরু হতে পারে।
এ চুক্তির বর্তমান অংশীদার পক্ষগুলো হচ্ছে ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি ও রাশিয়া।
রাইসি ম্যাখোকে বলেন, তেহরানের বিরুদ্ধে নতুন করে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতির স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, এ চুক্তির অংশীদার ইউরোপীয় সদস্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে ইরানকে সহায়তা করতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপের জবাবে তেহরান চুক্তিটির আওতায় করা তাদের প্রধান পরমাণু প্রতিশ্রুতির অধিকাংশ থেকে সরে এসেছে।