ভারতের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সম্পর্কে অসম্মানজনক মন্তব্যের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রানেকে। গত ২০ বছরের মধ্যে কোনো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর গ্রেফতারের ঘটনা ভারতে এটিই প্রথম। গত জুলাইতে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হন রানে। এ ঘটনায় বিজেপি ও শিবসেনা দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে ওঠে মুম্বাইসহ বিভিন্ন এলাকা।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সোমবার রায়গড়ে শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন মন্ত্রী রানে। জন আশীর্বাদ যাত্রা চলাকালে তিনি বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে জানেন না, কোন বছর ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল। এটা লজ্জার বিষয়। ১৫ আগস্ট ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি অন্যদের জিজ্ঞাসা করেন, এবার স্বাধীনতার কত বছর। আমি যদি সেখানে থাকতাম, তাহলে তাকে কষে চড় মারতাম।’
এই মন্তব্যের পর রানের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ করেছে ক্ষমতাসীন দল শিবসেনার নেতাকর্মীরা। তিনটি মামলা হয়েছে রানের বিরুদ্ধে। সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, রানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ ও ৫০৫ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের নাসিকেও সাইবার ক্রাইম বিভাগে শিবসেনার অভিযোগের ভিত্তিতে রানের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। এরপর রানেকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার দীপক পান্ডে। রানেকে গ্রেফতার করতে রওনা দেয় মহারাষ্ট্র পুলিশের একটি দল। এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে মুম্বাই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ির বাইরে সংঘর্ষ হয়। মুম্বাইয়ে তার বাড়ির সামনে মারমুখী হয়ে ওঠে বিজেপি ও শিবসেনা সমর্থকরা। শিবসেনার এমপি বিনায়ত রাউত মন্ত্রী রানের অপসারণ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, বিজেপি নেতৃত্বকে খুশি করতেই তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
এদিকে নারায়ণ রানের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করেছে হাইকোর্ট। মন্ত্রী রানে দাবি করেছেন যে, তিনি কোনো অপরাধ করেননি। তিনি জামিনের জন্য শীর্ষ আদালতে আপিল করতে পারেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
মন্ত্রী রানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় শিবসেনা পার্টি থেকেই। ১৯৯০ সালে তিনি শিবসেনার এমএলএ হন। ২০০৫ সালে তিনি শিবসেনা থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী হন। ২০১৭ সালে তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন।