যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তাদের সকল সৈন্য সরিয়ে নেয়ার কাজ শেষ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বেঁেধ দেয়া সময়সীমা মেনে ৩১ আগস্টের মধ্যেই মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের কাজ শেষ হলো।
এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটলো। জানা গেছে, কাবুলের স্থানীয় সময় ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টার কিছু আগে শেষ মার্কিন সামরিক বিমান সি-১৭ কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় ছিল সোমবার বেলা ৩টা ২৯ মিনিট।বিশৃঙ্খলভাবে এই যুদ্ধের সমাপ্তিতে বিশ্বের মহাশক্তিধর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে গভীর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধে দুই হাজার চারশ’ ও বেশি মার্কিন সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতি হামলায় ১৩ মার্কিন সৈন্য প্রাণ হারায়।এদিকে গত ১৪ আগস্ট তালেবানের কাবুল দখলের পর আমেরিকান বাহিনী এক লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি লোককে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তবে এখনও কিছু মার্কিন নাগরিক এবং মার্কিন সৈন্যদের সহায়তাকারী আফগান রয়ে গেছে বলে জানা গেছে। তাদেরকে পরে কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়া হবে বলে মার্কিন এক মুখপাত্র জানিয়েছেন ।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন। কারন, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে বাইডেন সমালোচিত হচেছন ব্যাপকভাবে। যুক্তরাষ্ট্র সম্মানজনকভাবে আফগানিস্তান ত্যাগ করতে পারেনি বলেও তীব্র সমালোচনা চলছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সামরিক বিমানটি কাবুল বিমানবন্দর ছাড়ার পর পরই তালেবান যোদ্ধারা সেখানে প্রবেশ করে। আকাশে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে তারা উল্লাস প্রকাশ করে।কিন্তু দুই দশক পর ক্ষমতা ফিরে পাওয়া তালেবানের সামনে রয়েছে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্র দেশটির পুনগর্ঠনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করলেও চরম দারিদ্য্র, খরাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত আফগানিস্তান।
কাবুলে তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়েছে।
তালেবানের সিনিয়র কর্মকর্তা আনাস হাক্কানি বলেছেন, এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে তিনি গর্বিত।
তবে সবার চোখ এখন তালেবানের দিকে। দেশটির একক কর্তৃত্ব পেয়ে তারা কিভাবে সবকিছু পরিচালনা করবে তা নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ এবং কৌতুহল। বিশেষ করে যেসব আফগান ও বিদেশী দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক কিন্তু ছাড়তে পারেননি তাদের সে সুযোগ দেয়া হবে কি-না তা নিয়ে উৎকন্ঠা রয়ে গেছে।
এছাড়া কাবুল বিমান বন্দরের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টিতেও এখনও কোন সুরাহা হয়নি। তালেবান তুরস্ককে লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়ার প্রস্তাব করলেও প্রেসিডেন্ট রিসেফ তায়িফ এরদোগান তাতে এখনও রাজি হননি।