আফগানিস্তানে আড়াই হাজার আমেরিকান সৈন্য রাখতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পরামর্শ দেয়ার দাবি করেছেন দুই শীর্ষ মার্কিন জেনারেল।
একইসঙ্গে তারা আল কায়দার সাথে তালেবান সম্পর্ক ছিন্ন করেনি বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মার্কিন সিনেটে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত শুনানিতে জেনারেল মার্ক মিলে ও ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি এই দাবি করেন।
মার্ক মিলে মার্কিন সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান। অন্যদিকে ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান। এই কমান্ডই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি দেখভাল করে।
মার্ক মিলে ও ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জির ভাষ্য, গত মাসে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আগে তাঁরা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সে দেশে আড়াই হাজার সেনা রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আফগান সরকারকে শক্তিশালী করার জন্যই তাঁরা এমন পরামর্শ দেন।
যদিও বাইডেন তাঁর পূর্বঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করেন। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটান।
মার্কিন সিনেটের আমর্ড সার্ভিস কমিটির শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ জেনারেল নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন। প্রায় ছয় ঘন্টা ধরে তারা আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার এবং কাবুল বিমানবন্দরের বিশৃঙ্খলা নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনও সিনেটের শুনানিতে অংশ নেন।
মার্ক মিলে বলেন, তালেবান এখনও সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা এখনও আল কায়দার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি।
তিনি বলেন, তালেবানরা ক্ষমতা সংহত করতে পারে কিনা কিংবা দেশটি আবারো গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে কিনা তা দেখার বিষয়। কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই সন্ত্রাসী হামলা থেকে আমেরিকান জনগণকে রক্ষা করতে হবে।
লয়েড অস্টিন বলেছেন, আমরা রাষ্ট্র গঠনে সাহায্য করেছি। কিন্তু একটি জাতিকে গঠন করতে পারিনি।
উল্লেখ্য, মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মধ্যেই গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান। এর মধ্য দিয়ে পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যায়। তালেবানের সঙ্গে সমঝোতা করেই যুক্তরাষ্ট্র ৩০ আগস্টের মধ্যে তার সেনা প্রত্যাহরের কাজ শেষ করে। কিন্তু এ প্রত্যাহারের সময় চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এমনকি শেষ মুহূর্তে কাবুল বিমানবন্দরে আইএসের বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ প্রায় ২শ’ মানুষ নিহত হয়। এ কারণে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন বাইডেন।