অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন যেন অনুষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিতের চেষ্টার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে ভোটাররা যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। আমাদের কিন্তু মূল দায়িত্ব হচ্ছে সেটা। কিন্তু অনেক সময় হয়তো সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের দেশে যে অভিযোগগুলো পাচ্ছি, যে অনেক সময় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয় না এবং ভোটাররা বাঁধাপ্রাপ্ত হন বা বিভিন্ন সময় অর্থশক্তি, পেশিশক্তি ব্যবহৃত হয়। যার ফলে নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটারের মতামত প্রতিফলিত হয় না।’
আজ নির্বাচন ভবনে ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়াও আজ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) ইসির সঙ্গে সংলাপে বসে।
সকালে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সঙ্গে বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা ছিল। কিন্তু দলটি সংলাপে আসেনি। এর আগে বাংলাদেশ মুসলিম লীগও সংলাপে অংশ নেয়নি। এ পর্যন্ত ১০টি দলের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন করেছে ইসি। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অন্য ২৯টি দলের সঙ্গেও বসার কথা রয়েছে ইসির।
সিইসি বলেন, ‘জাতীয় সাধারণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা দিয়েই সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। সংসদ গঠন করবেন। সরকার গঠন করবেন। সেদিক থেকে গুরুত্ব অপরিসীম।’
সংলাপে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
পরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘রাজনৈতিক ঐক্যমত তৈরির করার জন্য আপনাদের চেষ্টা করা উচিত। আপনাদের জন্য সেই সুযোগটা আরো বেশি। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মোটাদাগে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেন, যে কেউ সহিংসতা করবো না, শান্তিপূর্ণভাবে করবো। কেউ সহিংসতা করলে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করবো।’
সংলাপে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
এরপর দিলীপ বড়–য়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল)-এর প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে সংলাপে বসে। তাদের সাথে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) অনেক ভুল আছে এবং আমরা এসব ভুল সংশোধনের চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, ‘করোনাসহ বিভিন্ন কারণে এসব সংশোধনীতে একটু সময় লাগছে। আমাদের তরফ থেকে সেইভাবে যেহেতু কতগুলো কাজ করতে হয়, আমরা নির্বাচনের কাজ করি। আবার রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কাজও আমাদের ওপর পড়ে গেছে। তারপরে এনআইডি যেটা এটা বিশাল একটা কর্মযজ্ঞ। এখন আবার ওরা ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে কাজ করছে।’
এ সময় এনআইডি মহাপরিচালকে একেএম হুমায়ুন কবীর বলেন, অনেক ইচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। আবার অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। সবার শিক্ষা সনদ থাকলে সুবিধা হতো। আমরা মানুষকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছি। আমাদের ভুল হচ্ছে। তবে কমিশনের নির্দেশ আমরা প্রতিপালন করার চেষ্টা করছি।
সংলাপে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের সচিবসহ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল ২০ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত গণতন্ত্রী পার্টি, দুপুর ১২টা থেকে ১টা বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি এবং বিকেল ৩টা থেকে ৫টা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র সঙ্গে ইসির সংলাপে বসার কথা রয়েছে।