ভোলা জেলায় চলতি অর্থবছর ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিকটন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ। গত অর্থ বছর জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিকটন। যা দেশের মোট ইলিশ উৎপাদনের প্রায় ৩৩ ভাগ। এছাড়া সরকারের ইলিশ রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের ফলে প্রতিবছরই জেলায় ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৯৮ হাজার ৪০৪ মেট্রিকটন। ২০১৬-১৭ বছরে ১ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৮ মেট্রিক টন। ১৭-১৮ অর্থবছরে ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৯ মেট্রিক টন। ১৮-১৯ বছরে ১ লাখ ৩০ হাজার ৮৯২ মেট্রিকটন। ১৯-২০ অর্থবছরে ১ লাখ ৭১ হাজার ২৬৮ মেট্রিক টন। ২০-২১ বছরে উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন ও ২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাতউল্লাহ জানান, ভোলা জেলায় গত কয়েক বছর যাবত ইলিশের উৎপাদন বেড়ে চলছে। মূলত মা ইলিশ ও জাটকা ইলিশ রক্ষা, ইলিশ অভায়শ্রম সংরক্ষণ, নদীতে বিশেষ অভিযান ও ৬৫ দিন সমুদ্রে অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়নের প্রভাব পড়েছে ইলিশ উৎপাদনে।
তিনি জানান, জেলেরাও পূর্বের চেয়ে এখন অনেক সচেতন হয়েছে। তারা সরকারের নিষেধাজ্ঞার সময় জাটকা ও মা ইলিশ শিকার থেকে বিরত থাকছেন অনেকটাই। এতে করে ইলিশ নির্বিঘেœ ডিম ছাড়তে ও ছোট ইলিশ বড় হতে পারছে। ফলে ইলিশের প্রাচুর্যতা বাড়ছে।
এদিকে চলতি বছর ইলিশের ভরা মৌসুমে কাঙ্খিত ইলিশের দেখা মিলছেনা জেলেদের জালে। এর জন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়া ও নদী মোহনায় পলি পরে ভরাট হওয়াকে দায়ী করছে মৎস্য বিভাগ। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও ইলিশ মৌসুম অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এ খরা কেটে যাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া মা ইলিশের ডিম দেওয়ার সময় চলে এসেছে। এ সময়টাতে ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ নদীতে আসে। গত কয়েক বছর যাবত দেখা যাচ্ছে শীতের সময়টাতেও প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে।
সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো: জামাল হোসেন বলেন, গত বছরেও ইলিশের প্রাপ্তিটা মৌসুমের শেষের দিকে হয়েছে। তাই আশা করা হচ্ছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত বাড়বে। বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বাড়ার সাথে কাঙ্খিত ইলিশও ধরা পড়বে জেলেদের জালে। সব কিছু ঠিক থাকলে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।