ব্রেকিং নিউজ :
ফেনীতে বন্দিদশা থেকে মুক্ত শতাধিক পাখি গোপালগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর মতবিনিময় টাঙ্গাইলে ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ নাটোরে বর্ণিল পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত বেরোবি’র মাধ্যমে আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার পরিচালনায় চুক্তি স্বাক্ষর আলেম-ওলামাদের মেহনত ব্যর্থ হয়নি : ধর্ম উপদেষ্টা হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে, দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইলেন খালেদা জিয়া পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ২২ হাজার ৭০০ প্রবাসীর নিবন্ধন ভূমিকম্পের ঘটনায় আতঙ্কিত নয়, সচেতন হবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের- প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে হুমকি তৈরি করছে: মৎস্য উপদেষ্টা
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৪-১৭
  • ৯৩০ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিনিধি:- সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা তিন নেতাকে যেভাবে গোয়েন্দারা তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সেটার কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না এবং তা হাইকোর্টের আদেশের বিরোধী বলে জনিয়েছেন একাধিক আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী। সাবেক একজন পুলিশ কর্মকর্তারাও জানান, পুলিশ সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় কাউকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে না। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট আদেশও রয়েছে। আইন অনুযায়ী কাউকে তুলে নিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। আর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকেও কারণ জানাতে হয়, তার আইনি সুবিধা নেয়ার অধিকার দিতে হয়, তার স্বজনদের জানানোর সুযোগ করে দিতে হয়। তবে নানা সময় সারা পোশাকে নাগরিকদের ধরে নেয়ার অভিযোগ উঠে। এদের মধ্যে বহুজন কখনও ফিরে আসেননি। আর পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেয়ার অভিযোগ স্বীকারও করে না। বছর পাঁচেক আগে হঠাৎ নাগরিকদের সাদা পোশাকে তুলে নেয়ার প্রবণতার তৈরি হয়েছিল। তখন এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট একটি মামলা করে হাইকোর্টে। সেই মামলার একজন আইনজীবী ছিলেন দিলরুবা সরমীন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ যেভাবে তিন ছাত্রকে তুলে নিয়ে কথা বলেছে, এটা তারা পারে না। কারণ, হাইকোর্ট বলে দিয়েছে কোন প্রক্রিয়ায় কাউকে নিয়ে যেতে হবে। তার একটিও এখানে মানা হয়নি। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী কাউকে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে ওই কর্মকর্তাদের তাদের পরিচয় বলতে হবে। কী কারণে ওই ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে সেই কারণও তাদেরকে বলতে হবে। নোটিশ করে তাদের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সোমবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন, ফারুক হাসান এবং নুরুল ইসলাম নূরুকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নেয়। শুরুতে পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থা কেউই এই তিনজনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ স্বীকার করেনি। কিন্তু পরে জানা যায় তাদেরকে মিণ্টু রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। ঘণ্টা খানেক সেখানে অবস্থান শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফেরেন কোটা আন্দোলনের তিন নেতা। তারা জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে তুলে নেয়ার পর গুলিস্তান এলাকায় তাদের চোখ বাঁধা হয়। এরপর যখন চোখ খোলা হয়, তখন তারা নিজেদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে দেখেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তাদের কিছু তথ্য সহযোগিতার জন্য আনা হয়েছিল। তারা চলে গেছে। তাদের কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখানো হয়েছে। সেগুলোর বিষয়ে তাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।’ সবার কাছ থেকেই তথ্য নেওয়া হবে বলেও জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা। মানবাধিকার কর্মী এলিনা খান বলেন, পুলিশ কাউকে এভাবে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে না। ‘আমাদের আইনে তো রয়েছেই, হাইকোর্টের আদেশও রয়েছে কাউকে তুলে নিতে হলে প্রথমে তার পরিচয় প্রদর্শন করতে হবে। এরপর তাকে কী কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সেই কারণও তাকে বলা হবে। সবচেয়ে বড় কথা সাদা পোশাক পরিহিত অবস্থায় কাউকে তুলে নেওয়া যাবে না।’ জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূরুল হুদা বলেন, ‘কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিতে হলে অবশ্যই কিছু নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম না মেনে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নেওয়া ঠিক নয়।’ ‘তবে যেহেতু কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের নেওয়া হয়েছে। ওই সময়েতো কিছু ভায়েলেন্স হয়েছে, যেমন ভিসির (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের) বাড়ি ঘর ভাঙা হয়েছে সেই কানেকশনে নিলে তো নিতেই পারে।’ যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার শামসুল আরেফিন বলেন, ‘এই ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। এখানে আমি মন্তব্য করি কীভাবে?’ পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে সন্ধ্যায় কথা বলেছি, আর কী বলব?’ সাদা পোশাকে আটকের বিষয়ে হাইকোর্টে ব্লাস্টেও হয়ে মামলা করা আইনজীবী দিলরুবা সরমিন বলেন, ‘এর আগেও এ রকম অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাদের। তারা এই ধরনের কাজ কখনও করতে পারে না। এতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তাদের বিশ্বাসযোগ্যতাও নষ্ট হয়েছে।’ পুলিশ এই ধরনের বেআইনি কাজ করে যেতে থাকলে অপরাধীরাও সুযোগ নিতে পারে বলে আশঙ্কা আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat