• প্রকাশিত : ২০২৩-০৬-২৮
  • ২৭৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায় আজ জেলা প্রশাসনের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় দুইএকর জমির উপর নির্মিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ নাজমুল আহসান স্মৃতি পার্ক’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ বুধবার উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক কাটাখালী ব্রীজ এলাকায় নির্মিত এ পার্ক উদ্বোধন করেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আল মাসুদ, জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরুল ইসলাম হীরু, সদর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এডভোকেট মুখলেছুর রহমান আকন্দ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ নাজমুল আহসানের বোন রুজিনা তাসনিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম হীরু জানান, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই রাতে ‘অপারেশন কাটাখালি' পরিচালনা করে সফলভাবে ব্রীজটি ধ্বংস করে ফেরার পথে রাত শেষ হয়ে যাওয়ায় পার্শ্ববর্তী রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে আশ্রয় নেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগন। ওই গ্রামের জালাল মিস্ত্রী পাকিস্তান বাহিনীর স্থানীয় সদর দপ্তর আহাম্মদনগর ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবরটি পৌঁছে দেয়। খবর পেয়ে তিনদিক থেকে গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে হানাদার বাহিনীর সেনারা, শুরু হয় প্রচ- যুদ্ধ। এখানেই সম্মুখ সমরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ-এর কৃতি শিক্ষার্থী, অপারেশন কমান্ডার নাজমুল আহসান এবং অপর দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন ও আলী হোসেনসহ ১২ জন শহীদ হন। এরপর পাক বাহিনী রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দেয়। খুঁজে বের করে ৬০/৭০ জন গ্রামবাসীকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই নয়জন শহীদ হন। এছাড়াও হানাদার বাহিনী গ্রামের বেশ কয়েকজন নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়।
তিনি জানান, শেরপুর-ঝিনাইগাতী- নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে কাটাখালী ব্রিজটি পাড়ি দিয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলার আহাম্মদ নগরে ১১ নং সেক্টরের বিপরীতে হানাদার পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর স্থানীয় সদরদপ্তরে যেতে হতো। এছাড়াও কোয়ারিরোড, রাংটিয়া পাতার মোর, নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও এবং ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার অনেকগুলো ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ ও সরবরাহের একমাত্র পথ ছিল এই সেতু। কাটাখালী ব্রিজটি ধ্বংস করতে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী কোম্পানি কমান্ডার নাজমুলের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ডিনামাইট ফিট করে কাটাখালি ব্রিজটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। এতে ১১ নং সেক্টরের বিপরীতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর স্থানীয় সদরদপ্তর আহাম্মদনগর ক্যাম্প-সহ ভারতের মেঘালয় সীমান্ত এলাকায় অনেকগুলো ক্যাম্পের সাথে পাকিস্তান বাহিনীর যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে উল্লেখযোগ্য এলাকার যুদ্ধ পরিস্থিতি বদলে যায়।
স্বাধীনতা লাভের পর শহীদ নাজমুলের নামে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিদ্যালয় একটি ছাত্রহল, শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এছাড়াও মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ নাজমুলকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat