রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ফের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেদিন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২৪ জুলাই রাতে রাজধানীর বারিধারা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩শ’ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে সেতু ভবন লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামিরা অফিসের মূল ফটক ভেঙে প্রবেশ করে সেতু ভবনের সামনে রক্ষিত জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, নিরাপত্তা ভবন, সিসি ক্যামেরা, পার্কিং শেড, ক্যানটিন, গাড়িচালকদের কক্ষ, আনসার শেড, মুজিব কর্নার, জেনারেটর কক্ষসহ মূল ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ঘটায়। এ সময় তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে সেতু ভবনের সিনিয়র সচিব, অন্য অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তাকর্মীদের এলোপাথাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করে।
পরে আসামিরা নিচ তলার আনসার শেড, ড্রাইভার শেড হতে চেয়ার টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র এবং সেতু ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে নিচতলা হতে ১১ তলা পর্যন্ত অফিসে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। তারা অফিসে রক্ষিত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইল কেবিনেট, এসি, ফ্যান, পানির ফিল্টার, চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সরকারি ও ব্যক্তিগত মালামাল সামগ্রী চুরি করে এবং প্রত্যেক ফ্লোরে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। তাদের দেয়া আগুনে সেতু ভবনের নিচতলা হতে ১২ তলা পর্যন্ত ফ্লোরে রক্ষিত সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, পদ্মা সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুলেন সড়ক টানেল প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, সেতু বিভাগের আওতাধীন সব প্রকল্পের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি, এফডিআর ইনস্ট্রুমেন্ট, টেন্ডার সিকিউরিটি ডকুমেন্টস, ইন্টারনেট সার্ভার, শতাধিক কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী, আসবাবপত্র, জেনারেটর, ফায়ার এক্সটিংগুইশারসহ যাবতীয় নথিপত্র এবং সেতু ভবনের পার্কিংয়ে থাকা ৩২টি জিপ গাড়ি, ৯টি পিকআপ, ৭টি মাইক্রোবাস, ১টি মিনিবাস, ৫টি মোটরসাইকেল ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স পুড়ে যায়। এতে আনুমানিক ৩শ’ কোটি টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করেন।