ব্রেকিং নিউজ :
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন ভোলায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ১১২টি পূজামন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন বরিশালে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা কাপ্তাই হ্রদে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটিতে শেষ হল দুর্গোৎসব বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা : ধর্ম উপদেষ্টা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার এনসিপির নেতাকর্মীদের, সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের রাশিয়া থেকে তেল ক্রয়কারী দেশগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখার প্রতিশ্রুতি জি৭ মন্ত্রীদের বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৮-১৪
  • ৮৭৮৪৪ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
একাধারে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, গল্পকার, অভিনেতা, গীতিকার ও সাহিত্যিক হিসেবে স্বনামধন্য আমজাদ হোসেন। সেলুলয়েডে মাটি ও মানুষের কথা বলতেন তিনি। ছিলেন রাজনীতিসচেতন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী বরেণ্য এই পরিচালকের আজ জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তার বয়স হতো ৮২ বছর। তাকে ঘিরে আয়োজন করা হতো নানা অনুষ্ঠানের। কিন্তু সেসব আজ অতীতের গল্প।
কালজয়ী অনেক ছায়াছবির নির্মাতা আমজাদ হোসেন। এর মধ্যে রয়েছে- নয়নমণি, ভাত দে, গোলাপী এখন ট্রেনে, সুন্দরী, দুই পয়সার আলতা, জন্ম থেকে জ্বলছি ইত্যাদি। গোলাপী এখন ট্রেনে ও ভাত দে ছবির জন্য আমজাদ হোসেনকে শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
শিল্পকলায় অবদানের জন্য আমজাদ হোসেনেকে ১৯৯৩ সালে ভূষিত করা হয় একুশে পদকে। এ ছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য আমজাদ হোসেন ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন।
ব্যতিক্রমধর্মী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা তার কর্মজীবনে ১২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে একসঙ্গে ছয়টি ভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন এবং একই সঙ্গে পাঁচটি বিভাগে (গোলাপী এখন ট্রেনে চলচ্চিত্রের জন্য) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ ছবিতে আমজাদ হোসেনের অভিনয় জীবন শুরু। একই বছর মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ ছবিতে অভিনয় করেন। তার লেখা নাটক ‘ধারাপাত’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন পরিচালক সালাহ্উদ্দিন। এতে তিনি প্রধান একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন।
পরবর্তীকালে তিনি জহির রায়হানের সঙ্গে যোগ দেন এবং তার সহকারী হিসেবে কয়েকটি ছবিতে কাজ করেন। এর মধ্যে রয়েছে বেহুলা (১৯৬৬)। পরে তিনি চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় মনোনিবেশ করেন। আমজাদ হোসেন পরিচালিত প্রথম ছবি ‘আগুন নিয়ে খেলা’ (১৯৬৭)। পরে তিনি নয়নমণি (১৯৭৬), গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), ভাত দে (১৯৮৪) নির্মাণ করে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা অর্জন করেন। তার লেখা কাহিনী নিয়ে ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি জহির রায়হান পরিচালিত সাড়া জাগানো ‘জীবন থেকে নেয়া’।
১৯৮০-এর দশকে কসাই (১৯৮০), জন্ম থেকে জ্বলছি (১৯৮২), দুই পয়সার আলতা (১৯৮২), ভাত দে (১৯৮৪), কসাই (১৯৮২) সহ কয়েকটি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দেন। চলচ্চিত্র ছাড়াও টিভি নাটক ‘জব্বর আলী’ নির্মাণ ও এতে অভিনয় করে ছোট পর্দার দর্শকদের কাছেও আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা লাভ করেন বরেণ্য এই ব্যক্তিত্ব। আমজাদ হোসেনের চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান অভিনয়, লেখালেখি ও নির্মাণে নিজ নিজ মেধাশক্তির স্বাক্ষর রেখেছেন।
আমজাদ হোসেনের রচিত উপন্যাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নিরক্ষর স্বর্গে, ধ্রুপদী এখন ট্রেনে, দ্বিধাদ্বন্দ্বের ভালোবাসা, আমি এবং কয়েকটি পোস্টার, রক্তের ডালপালা, ফুল বাতাসী, রাম রহিম, আগুনে অলঙ্কার, ঝরা ফুল, শেষ রজনী, মাধবী ও হিমানী, মাধবী সংবাদ ইত্যাদি।

এ ছাড়া আমজাদ হোসেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস, জীবনী, ইতিহাস, কিশোর উপন্যাস, গল্পগ্রন্থ, ফিকশন, রচনাসমগ্র, কিশোরসমগ্র রচনা করে গেছেন।

আমজাদ হোসেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে। ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি।

চলচ্চিত্র-বোদ্ধাদের অনেকের মতে, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে যারা কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে গ্রামের যোগাযোগটা অতটা নিবিড় নয়। কিন্তু আমজাদ হোসেন গ্রামের মানুষকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে জানতেন, যার জন্য চলচ্চিত্রে তার চরিত্রগুলো জীবন্ত হয়ে উঠতো। তার দেখার ভঙ্গিটা ছিল অন্যদের থেকে আলাদা, ছবিগুলোতেও তার স্বাতন্ত্র্যের ছাপ স্পষ্ট। তার অনেক ছবিতে লোকজ সংগীতকে ভেঙে আধুনিকীকরণ করা হয়েছে, যা অনেক বড় কাজ বলে মনে করেন অনেকেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat