ফুটবল বিশ্বে এক রাতেই ভাঙল দুই কিংবদন্তির স্বপ্ন। একদিকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, অন্যদিকে লিওনেল মেসি—দুজনেই নিজ নিজ ক্লাবকে মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে দেখলেন। ম্যাচ শেষে দুজনের চোখেমুখে হতাশা স্পষ্ট। ফুটবলের নির্মম সৌন্দর্য যেন একসঙ্গে ছুঁয়ে গেল দুই তারকাকে।
বয়স ৪০ ছুঁলেও জয়ের তৃষ্ণা একটুও কমেনি রোনালদোর। বুধবার রাতে সৌদি আরবের জেদ্দায় এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে জাপানের কাওয়াসাকি ফ্রন্তেলের বিপক্ষে ৩–২ গোলে হারে তার ক্লাব আল নাসর। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে, ৯৫ মিনিটে এককভাবে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন পর্তুগিজ সুপারস্টার। ম্যাচ শেষে মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে হতাশ রোনালদো নিজেই যেন নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করছিলেন। হাত নাড়লেন, একবার তাকালেন আকাশের দিকে—সেখানে যেন প্রশ্ন ছিল, প্রতিউত্তরও।
এই ম্যাচে হারের মাধ্যমে রোনালদোর সৌদি ক্লাব ক্যারিয়ারে বড় শিরোপাহীন থাকার বৃত্তটিও অটুট রইল। আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত বড় কোনো ট্রফির দেখা পাননি তিনি। তাই হয়তো ম্যাচ শেষে এক্স হ্যান্ডলে রোনালদোর বার্তা ছিল হতাশায় গা না ভাসানোর প্রতিশ্রুতি—
রাতের সেই দুঃসংবাদ শেষ হওয়ার আগেই ভোরে এলো আরও একটি—এইবার লিওনেল মেসির কাছ থেকে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে ৩–১ গোলে হারে ইন্টার মায়ামি। দুই লেগ মিলিয়ে হোয়াইটক্যাপসের কাছে ৫–১ ব্যবধানে হার মানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটি। ফলে মেসির দলও টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়।
ম্যাচের ৯ মিনিটেই মায়ামি এগিয়ে যায়—মেসির পাস থেকে সুয়ারেজের সহায়তায় গোল করেন জর্দি আলবা। তবে বিরতির পর ভ্যাঙ্কুভার তিনটি গোল করে ম্যাচ নিজেদের করে নেয়। মেসি বেশ কয়েকবার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি।
পরিসংখ্যানভিত্তিক সংস্থা Opta Jack জানিয়েছে, মেসির বিপক্ষে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেল ভ্যাঙ্কুভার, যা এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির ক্যারিয়ারে প্রথমবার।
এমন এক রাত, যেটি শুরু হয়েছিল রোনালদোর পরাজয়ের মাধ্যমে, শেষ হলো মেসির হতাশার গল্প দিয়ে। যাঁরা রাতে রোনালদোর ম্যাচ দেখে ভোরে মেসির খেলা দেখতে ঘুম ভেঙেছিলেন, তাদের জন্য এ যেন এক অবিরাম হতাশার আবরণ।।