আপন জুয়েলার্সের মালিক ছাড়াও অন্য ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি :-
আপন জুয়েলার্সের মালিক ছাড়াও অন্য ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালানের অভিযোগ আছে। কারা চোরাচালানের মাধ্যমে সোনার ব্যবসা করছে তাদের তালিকাও আছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কাছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে নিজ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান। মইনুল খান বলেন, ‘স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা যে সবাই অবৈধ ব্যবসা করছে সেটা বলা যাবে না। অনেকে সুনামের সঙ্গে ভালোভাবে ব্যবসা করছে। আর সুনির্দিষ্ট তথ্য এবং তদন্ত ছাড়া কোথাও অভিযান করা যাবে না। তবে আপন ছাড়াও আরো অন্য ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। কারা চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণের ব্যবসা করছে তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে। মহাপরিচালক আরো বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কারণ সোনা চোরাচালানের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্সে। বিমানবন্দরে প্রতিনিয়ত সোনা চোরাচালানিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। সংবাদ সম্মেলনে মইনুল খান জানান, আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে জব্দকৃত সোনা গ্রাহকের নিকট হস্তান্তর করতে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। গঠিত কমিটি গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। ড. মঈনুল খান বলেন, ‘আপন জুয়েলার্স থেকে সোনা কেনার জন্য বিভিন্ন সময়ে অর্ডার ও বুকিং দিয়েছেন এমন ৩৮৯ জন গ্রাহকের একটি তালিকা শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কাছে আছে। ওই তালিকা দেখে ৮৫ জনকে সোনা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর বাকিদের সোনা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে আছেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের যুগ্ম কমিশনার সাফিউর রহমান, উপপরিচালক মো. জাকির হোসেন, উপপরিচালক এস এম শরিফুল হাসান এবং বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) একজন ও আপন জুয়েলার্সের একজন প্রতিনিধি। ওই কমিটি কাস্টম এবং গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সোনা কীভাবে বুঝিয়ে দেওয়া যায় সে বিষয়ে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন। গত ১৪ ও ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দা আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের পাঁচটি শোরুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ১৩ মণ সোনা ও ৪২৭ গ্রাম হীরা জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। পরে আইনি প্রক্রিয়ায় সেগুলো প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় দেওয়া হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে তিনবার শুনানির সুযোগ দিলেও তারা কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। গত ৪ জুন আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুমে আবার অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। সে ওই অভিযানে আপন জুয়েলার্সের শোরুমের লকারের ভেতরে গোপন আরো লকারের সন্ধান পাওয়া যায় এবং সেখান থেকে আরো সোনা উদ্ধার করা হয়। এর পর ৪ জুন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় যে, আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুমে শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচটি দল অভিযান চালিয়ে মোট ১৫ মণের অধিক সোনা জব্দ করে। এরপর আটক করা সোনাগুলো কাস্টমস হাউস, ঢাকার গুদাম কর্মকর্তার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া সোনার মধ্যে আপন জুয়েলার্সে অনেক গ্রাহকের সোনা আছে।