নিজস্ব প্রতিনিধি:- ভূমিষ্ঠ শিশুকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অথচ সেই মেয়েটি এখন শিশু হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসার জন্য।
বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার। শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির খুব বেশি সমস্যা নেই। তাকে বাঁচিয়ে রাখার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তারা।
শরিফুল ইসলাম নামে শিশুটির মামা জানান, তার বোন শারমীন আক্তারকে রবিবার রাতে ধামরাই থেকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয় সন্তান প্রসবের জন্য। তাকে হাসপাতালের ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
আজ সকাল আটটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার বোনের বাচ্চা প্রসব হয়। আর জন্মের পর পর তাকে মৃত ঘোষণার করেন চিকিৎসকরা।
শরিফুল কনস্টেবল হিসেবে কাজ করেন পুলিশে। তিনি জানান, শোক কাটিয়ে শিশুটিকে সমাহিত করতে আজিমপুর কবর স্থানে নিয়ে যান তারা। তার নাম রাখা হয় মীম। সেখানে গোসল করানোর সময় শিশুটি নড়ে উঠে। তখন বুঝতে পারেন শিশুটির হার্ট সচল আছে। মুহূর্তেই তার মধ্যে জাগে আশার আলো।
কবরস্থান থেকে শিশুটিকে নেয়া হয় আজিমপুরের একটি হাসপাতালে। সেখানে গিয়েই ডাক্তারদের কথায় আশা আরও বাড়ে শরিফুলের। পরে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে শ্যামলী শিশু হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখানকার ডাক্তাররা জানান, শিশুটি জীবিত।
শরিফুল জানান, শিশুটির মা এখনও ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি। তার স্বজনরাও আছেন সেখানে। ফোনে এই তথ্যটি জানিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের। আর সেখানে সবার মনে এখন খুশির হাওয়া।
আজিমপুর কবরস্থানের গোসলখানায় জেসমিন আক্তার ঝর্ণা নামে এক নারী জানান, গায়ে পানি ঢালতেই নবজাতকটি মৃদু নড়ে ওঠে। চোখে ভুল দেখছেন ভেবে আবার পানি ঢালতেই দেখেন নবজাতকটির শ্বাস-প্রশ্বাস ওঠানামা করছে। পরে অফিসে দৌড়ে খবর দিলে মোহরারসহ উপস্থিত সকলে ছুটে যান। বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেন নবজাতক শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে।
ঝর্ণা আরও বলেন, ‘ঢামেকের ডেথ সার্টিফিকেটে নবজাতক মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে তার বাবার নাম লেখা হয়েছে মিনহাজ। ঠিকানা- ধামরাই ঢাকা লেখা হয়েছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এ কে এম নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘আমি ঘটনার বিস্তারিত জানি না। শোনার পর আমি ওই বিভাগের প্রধানকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছি। তারা এ বিষয়ে পরে জানাবে।’
শিশু হাসপাতালের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম বলেন, ‘শিশুটিকে এখানে আনার পর আমাদের হাসপাতালের ডাক্তাররা তাকে দেখেছে। তাকে বেডে নেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় সে সুস্থ হয়ে উঠবে।’