মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের একদিন পর মঙ্গলবার দৃশ্যত ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছেন জেনারেলরা।দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সুচিকে আটকের পর বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠলেও সেনাবাহিনী নীরব থাকার পথকেই বেছে নিয়েছে।
এছাড়া মিয়ানামরের বৃহত্তম শহর ইয়াংগুনের রাস্তায় রাস্তায় অতিরিক্ত নিরাপত্তারও দেখা যচ্ছে না। এর অর্থ তেমন কোন গণবিক্ষোভ না থাকায় সামরিক বাহিনী এক ধরণের স্বস্তিদায়ক অবস্থার মধ্যেই রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে একজন ট্যাক্সি চালক বলছেন, আমরা আমাদের অসন্তোষ দেখাতে চাই। কিন্তু মা সুচি তাদের হাতে আটক। তাই আমরা নীরব থাকা ছাড়া এ মুহূর্তে তেমন কিছু করতে পারছি না।
সোমবার ভোরে সেনাবাহিনী মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্টসহ ক্ষশতাসীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি’র (এনএলডি) আরো কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে আটক করেছে।
গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সুচির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে।
সোমবার নবনির্বাচিত সংসদের প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী অধিবেশন স্থগিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় । বৈঠক শুরুর প্রাক্কালে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনার পর পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দ্রুত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। এর ব্যতয় হলে আবারো অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
এছাড়া জাতিসংঘ মহাসচিবও এ অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছেন।
নিরাপত্তা পরিষদ মঙ্গলবার মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।
এদিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নেতৃবৃন্দকে আটকের পর এক বছরের জন্যে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি এবং একজন জেনারেলকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
সামরিক প্রধান ও অভ্যুত্থানের নেতা মিন উং লাইং দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। সাবেক জেনারেল মিয়ন্ট সুই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে তারা আগামী এক বছর ক্ষমতায় থাকবে। এরপর তারা নতুন নির্বাচন দেবে।
এদিকে ক্ষমতাসীন এনএলডি পার্টির সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে আটকের পর উদ্বিগ্ন সময় পার করছেন পার্লামেন্ট সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এমপি বলেন, আমাদেরকে উদ্বিগ্ন না হতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা উদ্বিগ্ন। সুচি ও উইন মিয়ন্টকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। আমরা যদি তাদের ছবি দেখতে পারতাম তাহলে স্বস্তি পেতাম।