দেশের শ্রম বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, টেকসই উন্নয়নে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর লক্ষ্যে ট্যানারি শিল্পে শোভন কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে সম্মিলিত উদ্যোগের কোন বিকল্প নেই। সরকার, মালিক ও শ্রমিক সংগঠন গুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ট্যানারী শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ও সলিডারিটি সেন্টারের যৌথ আয়োজনে শিল্প সম্পর্ক উন্নয়নে একটি সেমিনারে দেশের শ্রম বিশেষজ্ঞরা এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে আলোচনায় মূল ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাজেরা খাতুন। সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর একেএম নাসিম, ডেপুটি কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মনিকা হার্টসেল, প্রবীণ শ্রমিক নেতা ও শ্রম বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাজী আবদুল হান্নান ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান প্রমুখসহ শ্রম মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর,বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশন, লেবার কোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশন, দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশন, জিআইজেড বাংলাদেশ, সলিডার সুইস বাংলাদেশ, ওশি ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে মতামত ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন।
বক্তারা ট্যানারী শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে পেশাগত সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য ও অন্যান্য শ্রম অধিকার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এর মধ্যে চামড়া শিল্পে গণতন্ত্রায়ণ, পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য এবং শ্রম অধিকার নিশ্চিতকরণে আইনি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা জরুরী। বক্তারা একইসাথে ট্যানারি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য বিদ্যমান জাতীয় আইন এবং আন্তর্জাতিক মানদন্ড বাস্তবায়নে তাদের সুপারিশ মালা পেশ করেন।
বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবিত অন্যান্য পরামর্শের রয়েছে- মানবসম্পদ জ্ঞান ও দক্ষতার বিকাশ, মালিক পক্ষের দূরদর্শিতা এবং প্রগতিশীল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম মজুরি প্রণয়ন, নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা, বৈষম্যহীন কর্মক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা জোরদার করা, শ্রম নেতৃত্বের বিকাশকে উৎসাহিত করা, শ্রম কল্যাণ সুবিধা বাস্তবায়ন, যৌথ দর কষাকষির অধিকার নিশ্চিত করা এবং দায়িত্বশীল ইউনিয়ন ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার নিশ্চিত করা।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাজেরা খাতুন বলেন, “সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের উচিত যার যার অবস্থান থেকে শিল্পের উন্নয়নে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করা। শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে ও পরিবেশগত মান উন্নয়নে ট্যানারি মালিকদেরও উচিত আইনের সকল অনুশাসন মেনে চলা। শিল্পের উন্নয়নের সাথে সাথে শ্রমিক অধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।