চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গড়ে উঠা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্পনগরে বিনিয়োগের যাবতীয় সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই পাচঁটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে এসেছে। আগামী বছরের শুরুতে আরও তিন প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করবে। এ শিল্পনগর পুরোপুরি চালু হলে সৃষ্টি হবে ১৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান।’
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রামে ‘বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর’ পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। পরে শিল্প নগরীর বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ৩৩ হাজার ৮০০ একর ভূমির ওপর এ শিল্পনগর গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের এই শিল্পনগর প্রকল্পে ইতিমধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ শিল্প বিনিয়োগের যতগুলো সুযোগ সুবিধা আছে সব নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ সুনিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই শিল্পনগর প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে ১৩৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাদেরকে ঘর করে দেবো। তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া হবে। এলাকার জনগণের পাশাপাশি শিল্প নগরীর নিরাপত্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে নতুন থানা প্রতিষ্ঠা করাসহ যাবতীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
মুখ্য সচিব বলেন, ‘এই শিল্প নগরীতে গার্মেন্টস, কৃষি-পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র, সমন্বিত টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, জাহাজ নির্মাণ, মোটরবাইক সংযোজন কারখানা, খাদ্য ও পানীয়, পেইন্ট এবং রাসায়নিক, কাগজ, প্লাস্টিক, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং (অটো-পার্টস এবং সাইকেলসহ), ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, বিদ্যুৎ এবং সোলার পার্ক স্থাপন করা হবে।’
সাংবাদিকদেন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান ইউসুফ হারুন বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ বলছে, মীরসরাই, সীতাকু- ও সোনাগাজী অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩৩ হাজার ৮০০ একর জমিতে গড়ে উঠছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর। ইতোমধ্যে ওই শিল্পজোনে এশিয়ান পেইন্টস, নিপ্পন ম্যাকডোনান্ড স্টিল মিল ও সামুদাসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করেছে। আরও তিন প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে।’
এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ তোফায়েল ইসলাম, রেঞ্জ ডিআইজি নূরে আলম মিনা, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, পুলিশ সুপার এ কে এম শফিউল্লাহসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয়ে ব্রিফিং শেষে জেলা প্রশাসক আবুল বশর মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান মুখ্য সচিব, বেজা চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত সবাইকে নিয়ে শিল্পনগর ঘুরে দেখান। পরে অতিথিরা শিল্পনগরের হৃদে মাছের পোনা ছাড়েন এবং বৃক্ষরোপণ করেন।