
আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর প্রতিনিধি:- হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বিবাদমান ২ গ্রুপের কোন্দলে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস। ছাত্র ও পরামর্শ বিভাগের পরিচালককে অব্যাহতি দেয়ার প্রতিবাদে ভিসিকে ৪ ঘন্টা অবরুদ্ধ করা হয়। জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ভিসিপন্থী ছাত্রলীগের নেতারা তাঁকে উদ্ধার করে। এসময় উদ্ধারকারীদের হামলায় আহত হন ৬ শিক্ষক। পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি।
সোমবার বিকেল ৪টায় হাবিপ্রবির ভিসি ছাত্র ও পরামর্শ বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ডাঃ এসএম হারুন-উর রশিদকে অব্যাহতি দিয়ে প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন খান লিখনকে দায়িত্ব দিলে আওয়ামীপন্থী প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দ ভিসি প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেমের কক্ষের মেঝেতে বসে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন। ৪ ঘন্টা ভিসি অবরুদ্ধ থাকার পর রাত ৮টায় তাঁর অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ভিসির কক্ষে প্রবেশ করে তাঁকে উদ্ধার করেন। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় আহত হন প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের শাজদিক আহমেদ, হাফিজ আল-আমিন, পলাশ হাসান জামিল, মাসুদ ইবনে আফজাল, আতিকুল হক ও রুবায়াত হাসান। ভিসিপন্থী শিক্ষকেরা ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিসিকে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে তাঁর ক্যাম্পাসের বাসভবনে রেখে আসেন।শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বলরাম রায় অভিযোগ করেন, ভিসির উপস্থিতিতেই তাঁর অনুসারী ছাত্ররা শিক্ষকদের উপর হামলা চালায়। এসময় ভিসির সমর্থক কয়েকজন শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন। এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই ঘটনা ন্যাক্কারজনক। আহত ৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ৪ জনকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ২ জনকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভিসি প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম জানান, ছাত্র-শিক্ষকরা তাঁকে অবরুদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে বাসভবনে নিয়ে যান। তবে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সদস্যদের উপর কেউ হামলা করেনি বলেও তিনি দাবী করেন। শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বাদী হয়ে সোমবার রাত ১১টায় কোতয়ালী থানায় ১৩ জন শিক্ষক ও ছাত্রের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা দেড়শ জনকে আসামী করে কোতয়ালী থানায় মামলা করলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৪টা) মামলা রেকর্ড করা হয়নি। পুলিশ সুপার মোঃ হামিদুল আলম জানান, তদন্ত করে অভিযোগ সম্পর্কে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে দেড় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ভিসি পন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, ড. আবুল কাসেম ভিসি হিসেবে ২ ফেব্রুয়ারী যোগদানের পর থেকেই প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের ব্যানারে স্বার্থান্বেষী মহল তাকে অসহযোগিতা ও বিরক্ত করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করে বিভিন্ন সময় তাঁরা ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। শিক্ষক ফোরামের সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. আনিস খান ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বলরামের নেতৃত্বে শিক্ষকেরা ভিসির রুমে গিয়ে মেঝেতে বসে ও শুয়ে পড়েন। ভিসি শিক্ষকদের পরদিন আলোচনার জন্য প্রস্তাব দিলেও তাঁরা তাতে কর্ণপাত না করে ৪ ঘন্টা ভিসিকে অবরুদ্ধ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডীন প্রফেসর মো. মিজানুর রহমান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. শাহাদাৎ হোসেন খান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. মো. ফজলুল হক, সহকারী প্রক্টর সৌরভ পাল চৌধুরী, সেকশন অফিসার মোহাম্মদ সামসুজ্জোহা বাদশা, ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী নিশাত সুলতানা, কর্মচারী মো. আব্দুর রহিম, শ্রমিক নেতা রাজু আহমেদ, ছাত্রলীগ নেতা মো. মারুফ, রিয়াদ খান এবং সাদিয়া ইয়াসমিন প্রমূখ।
দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় বাইসাইকেল আরোহী নিহত
আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর প্রতিনিধি:- সড়ক দুর্ঘটনায় দিনাজপুরে বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। ঘাতক ট্রাকের চালক গ্রেফতার
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ী পশু হাসপাতাল মোড়ে চাল বোঝাই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে বাইসাইকেল আরোহী আনোয়ার ঘটনাস্থলে নিহত হন। নিহত আনোয়ারের বাড়ী বিরল উপজেলার বিজোড়া গ্রামে। এলাকাবাসী ঘাতক ট্রাকের চালক আবুল বাসারকে আটক করে কোতয়ালী পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। এঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আনোয়ারের লাশ ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ২টি গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ দাবী
আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর প্রতিনিধি:- বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকার পাঁচঘরিয়া ও পাতিগ্রাম মৌজার ২৫০টি পরিবার অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দাবী করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া এলাকার পাঁচঘরিয়া, পাতিগ্রাম মৌজার বসবাসকারীরা বাড়ী ঘর ফাটার ক্ষতিপুরন ও পুলিশি হয়রানী বন্ধের দাবী জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জনসম্পদ, পরিবেশ ও বসতবাড়ী রক্ষা কমিটি।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম লিখিত বক্তব্যে বলেন, পার্বতীপুর বড়পুকুরিয়া এলাকার পাঁচঘরিয়া ও পাতিগ্রামে কোল মাইনিং কোম্পানী ডিনামাইট বিস্ফোরনের কারণে প্রায় ৮০০ বাড়ীঘরের ফাটল ও ক্ষতি সাধন হয়। ক্ষতিপুরনের দাবীতে আমরা জনসম্পদ, পরিবেশ ও বসতবাড়ী রক্ষা কমিটির মাধ্যমে ক্ষতিপুরনের দাবীতে ২২ অক্টোবর বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কর্তৃপক্ষের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। কিন্তু ১৮ নভেম্বর মধ্যরাতে কোল মাইনিং কর্তৃপক্ষের ইঙ্গিতে পুলিশ ২ গ্রামে অভিযান চালিয়ে শাহীন পান দোকানী বেলালকে বেদম প্রহার করে এবং হুমকি দিয়ে বলে আমাদের কাজে বাঁধা দিলে বিপদ হবে। বাড়ী ঘরের ক্ষতিপুরন ও পুলিশী হয়রানী বন্ধের দাবী জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান, সদস্য মেহেদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, ফরমান আলী, সাইফুল আলম, আব্দুল হামিদ ও শাহাদাৎসহ গ্রামবাসী।