ব্রেকিং নিউজ :
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন ভোলায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ১১২টি পূজামন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন বরিশালে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা কাপ্তাই হ্রদে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটিতে শেষ হল দুর্গোৎসব বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা : ধর্ম উপদেষ্টা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার এনসিপির নেতাকর্মীদের, সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের রাশিয়া থেকে তেল ক্রয়কারী দেশগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখার প্রতিশ্রুতি জি৭ মন্ত্রীদের বিশ্বখ্যাত প্রাণিবিজ্ঞানী ড. জেন গুডলের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
  • প্রকাশিত : ২০১৮-০৬-০৬
  • ৩৮৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
অভিযানের মধ্যেও চলছে অবাধে মাদক বেচাকেনা
সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আরো ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা। মাদক নির্মূলে সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যেও গ্রামাঞ্চলে অবাধে চলছে মাদকের বেচাকেনা। অভিযানের প্রেক্ষিতে রাজধানীসহ দেশের জেলা শহর এলাকা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। তবে গ্রামে এখনো হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক। টেলিফোন করলেই নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে নাম্বারবিহীন মোটর সাইকেলে ইয়াবা সরবরাহ করা হয়। আর নানা কৌশলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা মাদকের গডফাদাররাও ব্যবসার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলকে বেছে নিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, দেশের অনেক গ্রামের রাস্তাঘাটের অবস্থা খারাপ। আবার কোনমতে ওইসব গ্রামে পৌঁছানো হলেও মাদক ব্যবসায়ীরা মোটর সাইকেলে টান মেরে দ্রুত পালিয়ে যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভিতরে থাকা অসাধু কর্মকর্তারাও অভিযানের আগাম তথ্য ফাঁস করে দেয়।  গ্রাম পর্যায়ের বেশিরভাগ থানার এক শ্রেণীর কর্মকর্তা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত উেকাচ পেয়ে থাকেন। এ কারণে ওই সব পুলিশ কর্মকর্তা গ্রামাঞ্চলে মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে থাকেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ীদের দেশের প্রতিটি গ্রামে একাধিক পেমেন্ট সোর্স আছে। এসব সোর্সরা ব্যবসায়ীদের কাছে তথ্য পাচার করে দেয়। যদি গ্রামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সদস্য দেখা যায়, এমনকি অপরিচিত কাউকে দেখা মাত্রই এসব সোর্সরা মাদক ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দিয়ে সতর্ক করে। শুধু তাই নয়, সোর্সরা নতুন নতুন সেবকদের কাছে মাদক পৌঁছেও দেয়।
গ্রামাঞ্চলের দুইজন মাদক ব্যবসায়ী জানান, গ্রামে এখন সর্বত্রই মাদক, বিশেষ করে ইয়াবা পাওয়া যায়। কোন কোন এলাকায় ইয়াবা ‘বাবা’ বড়ি কিংবা ট্যাবলেট হিসেবে পরিচিত। এক সময় এটি বিশেষ বিশেষ স্পটে পাওয়া যেতো। কিন্তু এখন গ্রাম-গঞ্জের সব এলাকার মধ্যেই পাওয়া যায়। নানা সাংকেতিক ভাষায় ফোন করলেই পৌঁছে যায় ইয়াবা। আর মাদক বহনের জন্য নাম্বারবিহীন মোটর সাইকেল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহর এলাকায় চুরি হওয়া মোটর সাইকেলগুলো এখন গ্রামাঞ্চলে মাদক সরবরাহ কাজে লাগানো হয়েছে। মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিত্সা নিয়ে অনেকটা সুস্থ হওয়া গ্রামের একজন যুবক ইত্তেফাককে বলেন, এক সময় ফেন্সিডিল, হিরোইনের মতো মাদক বেশি থাকলেও, এখন তার জায়গা দখল করেছে ইয়াবা। কারণ এটি সহজেই বহন করা যায়। কারণ এখন অনেকে পাড়া মহল্লায় ইয়াবার ব্যবসা করছে। যারা নেশা করে, তারাও টাকার জন্য নেশার পাশাপাশি বিক্রিতে নেমে পড়েছে, তেমনি অনেকে শুধুমাত্র বেচা বিক্রি করে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা তাদের খুব একটা কিছু বলে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তির অভিযোগ, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনীতিকদের একটি অংশও মাদক ব্যবসায় সরাসরি জড়িত। এ কারণে এত সহজে সবার সামনে ইয়াবা বিক্রি সম্ভব হয়। তিনি বলেন, সবাই জানে কে বিক্রি করছে, কিন্তু বিক্রেতাদের কেউ ধরে না। কারণ এদের ব্যবসার ভাগ চলে যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতাদের পকেটেও।
ওই যুবকের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তার পিতাও সঙ্গেই ছিলেন। তিনি জানালেন, ছেলে মাদকাসক্ত হয়েছে টের পাওয়র পর থেকেই তারা ভোগান্তির ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলন, ‘পিতার কাছে সবচেয়ে কষ্টের হচ্ছে তার কাঁধে ছেলের মৃতদেহ। কিন্তু ছেলে মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে সেই কষ্ট মনে হয় তার চেয়েও বেশি।’ মাদকাসক্ত একমাত্র কন্যার বাবা ইত্তেফাককে বলেন, এখন প্রত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ছে মাদকের উপকরণ। ধ্বংস করে দিচ্ছে আমাদের তরুণ ও যুব সমাজকে। মাদকের বিষাক্ত ছোবলে উত্কণ্ঠিত অভিভাবকরা। তাদের চিন্তা কখন যেন মাদকের নেশার জালে আটকা পড়ে তার প্রিয় সন্তান। স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বড় অংশ ইয়াবা বেচাকেনায় জড়িয়ে পড়েছে। এসব শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীতে ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ে।
প্রতিনিয়ত মাদকসেবী স্বামীর হাতে প্রত্যন্ত গ্রামের নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। মাদক ব্যবহারকারীদের নানা অপরাধ সমাজ- সংসারে ঘটে চলছে অহরহ। খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা সমাজে বসবাসকারী একজন মাদক সেবীদের পক্ষে করা সম্ভব নয়। গাঁজা, মদ, ফেসসিডিল, ইয়াবা নামের মাদক ব্যবহারের ফলে মাদকসেবীরা শুধু নেশাগ্রস্থই নয় তারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে তাদের কাছে অপরাধ করা কোন অন্যায় বলে মনে হয় না। বর্তমানে টাকা হলেই গ্রাম-গঞ্জে সর্বত্রই পাওয়া যাচ্ছে মাদক।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat