ব্রেকিং নিউজ :
ঝিনাইদহে চালের উৎপাদন ও সরবরাহ সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভা নোয়াখালীতে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লায় উচ্ছেদ অভিযান দিনাজপুর হাবিপ্রবিতে ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে তৈরি চিত্রকর্ম প্রদর্শনী নারায়ণগঞ্জে ইকোনোমিক জোন পরিদর্শনে ভুটানের রাজা জাতির জন্য বিএনপি-জামায়াত অভিশাপ: নাছিম জলবায়ু-সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : পরিবেশমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ প্রদান অব্যাহত থাকবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বিএনপি সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ নস্যাৎ করতে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে : ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনা বাংলা বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: শফিকুর রহমান চৌধুরী
  • প্রকাশিত : ২০২২-০৮-০৯
  • ২৯১ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আজ দেশে পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। 
কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার এই দিনটি ধর্মীয়ভাবে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের মহিমা হিসেবে এ দিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ পবিত্রতম দিবস। এজন্যই যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সারা দুনিয়ার মুসলমানরা এ দিনটি পালন করে। বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত হয়।
হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম এই দিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেইন (রা.) ও তাঁর পরিবার এবং অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন।
মর্মস্পর্শী এ ঘটনা স্মরণ করে প্রতি-হিজরি সনের ১০ মহররম বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় শোকাবহ দিনটি পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। 
কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা যোগায়। পবিত্র আশুরা মানেই শোকের-মাতম। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমে তাদের হৃদয়-নিংড়ানো শোকের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এবছরও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পবিত্র আশুরার আবশ্যক সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিপালিত হয়।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। আজ সরকারি ছুটি। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা বিশেষ প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশ করে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও এবং স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য তুলে ধরতে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে।
করোনা মহামারির ব্যাপক প্রাদুর্ভাবে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে মহররমের ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল বের হয়েছে। এতে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলিমদের ঢল নামে। ঢাকায় হোসেনী দালান ঘিরে শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের ঐতিহ্য রয়েছে।
মিছিলে আসা শিয়া মুসলিমদের বেশিরভাগই কালো পোশাক পরে বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনি তোলেন। হোসেনি দালান ইমামবাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত মিছিলে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারও চোখে পড়ে। তরুণদের হাতে হাতে ছিল বিচিত্র আলাম (দীর্ঘ লাঠির মাথায় পতাকা)।
তাজিয়া মিছিলটি বকশিবাজার, উর্দ্দুরোড, লালবাগ চৌরাস্তা, গৌর-এ শহীদের মাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে জিগাতলা (ধানমন্ডি লেকের কাছে) গিয়ে শেষ হয়। পথের দু’পাশে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। মানুষ ছাদে দাঁড়িয়ে, জানালা দিয়ে মিছিল উপভোগ করে। পুরো মিছিল ঘিরে ছিল পুলিশ, র‌্যাবসহ বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নেয় হোসেনী দালানে। প্রতিটি ইমামবাড়া সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সকালে মিছিলে আসা লোকজনকে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশি করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করানো হয়। 
শিয়া মুসলিমরা তাজিয়া মিছিলে শোকের প্রতীক হিসেবে খালি পায়ে পুরুষরা কালো পাঞ্জাবি-পাজামা এবং নারীরা কালো কাপড় পরে মিছিল করেছে। ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে মাতম ও বুক চাপড়ে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণ করেন তারা। মিছিলে অংশ নেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ভক্তরা। মিছিলের সামনের কাতারে ছিল ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেনের দুটি প্রতীকী ঘোড়া, দ্বিতীয় ঘোড়ার জিন ছিল রক্তের লালে রাঙানো। মিছিলে ছিল ‘বৈল দল (ঘণ্টা পড়া তরুণ)’। কেউ বা নওহা (শোকগীতি) পড়ছিল। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তাজিয়া মিছিলে পাইক (শরীর রক্তাক্ত করা) দলভুক্ত ব্যক্তিদের দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে।
মিছিলের প্রথম অংশে দুটি কালো গম্বুজ বহন করা হয়েছে। জানা যায়, বিবি ফাতেমাকে স্মরণ করে এ গম্বুজ দুটি বহন করা হয়েছে। মিছিলে কালো কাপড় দিয়ে ইমাম হোসেন (রা.) এর প্রতীকী মরদেহ বহন করেন শিয়া মুসলিমরা। ধানমন্ডি লেকে প্রতীকী কারবালা প্রান্তরে এসে মিছিলটি শেষ হয়।
মিছিলে অংশ নেওয়া শিয়া মুসলিমদের হাতে লাল, সবুজ, কালোসহ বিভিন্ন রংয়ের নিশান, মাথায় শোকের কালো কাপড় শোভা পায়। এ বছর তাজিয়া মিছিলে প্রায় এক হাজার নিশান উড়ানো হয়। কারবালার স্মরণে কালো চাঁদোয়ার নিচে কয়েকজন বহন করেন ইমাম হোসেনের প্রতীকী কফিন। মাতমকারীদের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন সেচ্ছাসেবকরা। তাদের পানি ও শরবত বিতরণ করতে দেখা যায়।
এছাড়া পবিত্র আশুরা ১৪৪৪ হিজরি উপলক্ষে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে সোমবার বাদ যোহর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ’পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বাদ যোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমসহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সকল বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat