মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় মহান আল্লাহ’র দরবারে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে প্রধান প্রধান ঈদ জামাত শেষ হয়েছে।
নগরীর সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত হয় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) তত্ত্বাবধানে আজ সকাল ৮টায় প্রথম ঈদ জামাতে ইমামতি করেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব হযরতুল আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। একই মাঠে সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মৌলানা আহমদুল হক।
চট্টগ্রামের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জামাতে শরিক হন। নামাজ ও মোনাজাত শেষে একে অপরের সাথে কোলাকুলির মধ্য দিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। করোনা মহামারির কারণে বিগত দুই বছর এতো ঘটা করে ঈদ জামাতের আয়োজন করা যায়নি। জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কায় স্বাস্থ্যবিধির পরামর্শ মতে দূরত্বে থেকে মানুষ নামাজ আদায় ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনে জিমনাসিয়াম মাঠে প্রধান ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়। সকাল ৯ টায় এ জামাতে ইমামতি করেন বায়তুশ শরফ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হযরত মাওলানা ড. সাইয়েদ মুহাম্মদ আবু নোমান।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪১ টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে অন্তত একটি করে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির আওতাভুক্ত নগরীর ৯৪ আঞ্চলিক ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮ টা থেকে ৯ টার মধ্যে প্রতিটি ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। ঈদের নামাজে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় নগরীতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ও উপজেলার প্রধান জামাতে জেলা পুলিশ ও স্ব স্ব থানা পুলিশের উদ্যোগে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়।
ঈদ জামাতের পরপর বাংলাদেশের চিরায়ত প্রথা অনুযায়ী মুসলমানরা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। এ বছরের ঈদ আনন্দ খানিকটা ব্যতিক্রম। করোনা মহামারির ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত বিশ^ ও বাংলাদেশে গত দু’বছর কোনো উৎসবই পূর্ণ আনন্দ উৎসাহে পালন করা যায়নি। এবার বেশ কিছুদিন আগে থেকে করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় মানুষ তাদের সামর্থ্য মতো ঈদের কেনাকাটা করে এবং ঈদের নামাজের পরপরই ‘ঈদ বেড়ানো’ শুরু করে।
তবে, দুপুর দেড়টার দিকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হলে ক্ষণিকের জন্য বিঘিœত হয় স্বজনদের বাড়িতে যাওয়ার পর্ব। এ বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।