জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৪৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৯ হাজার ৯৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকশেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এসময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড.শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক সভায় অনুমোদিত ৪৪ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৯ হাজার ৯৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ২৯ হাজার ৯৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা ৭ হাজার ৫৭৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৬১ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- ঢাকার শেরেবাংলা নগর প্রশাসনিক এলাকায় বহুতল সরকারি অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প। ঢাকাস্থ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ১২৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার সংযোগকারী সড়ক যথাযথমানে উন্নতীকরণ প্রকল্প। ইলিয়টগঞ্জ-মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর-বাঞ্চারামপুর জেলা মহাসড়কটি যথাযথমানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প। রাজউক পূর্বাচল ৩০০ ফুট মহাসড়ক হতে মাদানী এভিনিউ সিলেট মহাসড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। সাতক্ষীরা-সখিপুর-কালীগঞ্জ মহাসড়ক এবং কালীগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প। চার লেনে উন্নীত ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) (দাউদকান্দি-চট্টগ্রাম অংশ) এর চার বছরের জন্য পারফরম্যান্স-বেইজড অপারেশন ও দৃঢকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
এছাড়াও রয়েছে- ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প। গাবতলী সিটি পল্লিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ক্লিনারবাসীদের জন্য বহুতলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। ঢাকা পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। বর্ধিত ঢাকা পানি সরবরাহ রেজিলিয়েন্স প্রকল্প। ঢাকা স্যানিটেশন উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভিন্ন রাস্তা উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প। বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (আরএমইউ) স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। মুগদা মেডিকেল কলেজের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক সুবিধা সম্প্রসারণ প্রকল্প । সাপোর্টিং ইপি¬মেন্টেশন অব দ্যা মাদার এন্ড চাইল্ড বেনিফিট প্রোগ্রাম প্রকল্প। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, উন্নয়ন এবং আনুষঙ্গিক কাজ বাস্তবায়ন প্রকল্প। আইসিটি শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণের জন্য নেকটারের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রকল্প। উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। ইমপ্রুভমেন্ট অব আরবান পাবলিস হেলথ প্রিভেনটিভ সার্ভিসেস প্রজেক্ট। অনুমোদিত আরও প্রকল্প হলো- যমুনা নদী টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্প-১ দূর্যোগ ঝঁকি অর্থায়ন (কম্পোনেন্ট ৩) প্রকল্প। মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ এর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প। যশোর রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা প্রকল্প। সুগন্ধা নদীর ভাঙন হতে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা ও নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা রক্ষা প্রকল্প।সমগ্র দেশে শহর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্ব) প্রকল্প। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মৌলভীবাজার (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প। মেহেরপুর সদরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও দেশের মধ্য পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ-প্রতিবেশ উপযোগী গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ প্রকল্প। বঙ্গবন্ধু পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপন এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণায় সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প।পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প।
এদিকে, ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া শুধু মেয়াদ বেড়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন ও খুলনা জেলা পুলিশ লাইন নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। এছাড়া, ৫০ কোটি টাকার কম ব্যয় হওয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী নিজেই অনুমোদন দিয়েছেন পাঁচটি প্রকল্প- সেগুলো আজ অবগতির জন্য উত্থাপন করা হয়। প্রকল্পগুলো হলো- স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) অসমাপ্ত রেখে সমাপ্তকরণ প্রকল্প। তাঁতীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে চলতি মূলধন সরবরাহ ও তাঁতের আধুনিকায়ন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। জামদানি ভিলেজ স্থাপন প্রকল্প। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের আওতায় পাঁচটি বেসিক সেন্টারে পাঁচটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, একটি ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট এবং ২টি মার্কেট প্রমোশন সেন্টার স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প। গোলেজা খাতুন বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ও অটিজম বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ও থেরাপি সেন্টার নির্মাণ, গোপীনাথপুর, পীরগঞ্জ, রংপুর প্রকল্প।