ব্রেকিং নিউজ :
বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য তুহিনের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পে এডিবির বিনিয়োগ জলবায়ু সংকটকে তীব্র করছে: মোংলায় বক্তারা নাটোরের সিংড়ায় যানজট নিরসনে যানবাহনের লাইসেন্স প্রদান আজারবাইজানের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াতে সম্মত প্রধান উপদেষ্টা স্বাধীন সাংবাদিকতা বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি : কাদের গনি চৌধুরী সাংবাদিকতার দায়িত্ব ও নৈতিকতা-বিষয়ক আইন হওয়া প্রয়োজন : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিকে নিরাপদ ও ডিজিটাল করতে বিএসসিএল ও স্টারনুলার মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষর খালেদা জিয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি: বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক সরকার দীপ্ত টিভির কার্যক্রম বন্ধ করেনি : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০৩-১৮
  • ৫৪৬৫৪৩৯৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শ্রম খাতসহ অন্যান্য খাতের সংস্কারে সকল অংশীজনের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ও টেকসই সংস্কার সাধনে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ৩৫৩তম গভর্নিং বডি অধিবেশনে বাংলাদেশের শ্রমখাত সংস্কার নিয়ে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন সোমবার এ কথা বলেন।

জেনেভায় বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। 

এতে আরও বলা হয়েছে, উক্ত অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের উপনেতা আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত অধ্যাপক লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন।

অধিবেশনে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের শ্রম খাতে সাধিত অগ্রগতি প্রতিবেদন তুলে ধরেন শ্রম উপদেষ্টা।

গত নভেম্বরে সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনের পর বর্তমান সরকারের আমলে দ্বিতীয়বারের মত এক্ষেত্রে অগ্রগতির ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়েরকৃত মামলাগুলোর অধিকাংশ বাতিল করেছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ত্রিপক্ষীয় কমিটিগুলোতে প্রকৃত শ্রমিক ও মালিক- এর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে। 

শ্রম উপদেষ্টা জানান, জাতীয় ত্রিপক্ষীয় কাউন্সিলের সভায় চলমান শ্রম আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে আইনটির আওতা অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা, তত্ত্বাবধান ও প্রশাসনিক পদের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সম্প্রসারণ, অনায্য শ্রম আচরণ ও ইউনিয়ন বিরোধী বৈষম্যের শাস্তি তিনগুণ বর্ধিতকরণ, শিশুশ্রমের শাস্তি পাঁচগুণ বর্ধিতকরণ, জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধকরণ,  কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য ও সহিংসতা এবং জবরদস্তি শ্রমের শাস্তি নির্ধারণ, শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্তকরণ নিষিদ্ধ ও  এর শাস্তির বিধান সংযোজনে ত্রিপক্ষীয় ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দলিলাদি ও বাধ্যতামূলক সভা কমিয়ে আনা, ১০ কার্যদিবসের মধ্যে শ্রমিকের সংখ্যা প্রদানে মালিকের বাধ্যবাধকতা ও একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত ইউনিয়নের সংখ্যা তিনটি থেকে পাঁচটিতে উন্নীতকরণেও সকলে ঐকমত্য হয়েছে। তবে, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধনের জন্য ন্যূনতম কর্মীর শতকরা হার বা সংখ্যার বিষয়সহ কিছু বিষয়ে এখনো ঐকমত্য অর্জিত হয়নি। কিন্তু ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে তা অর্জিত হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

এর মাধ্যমে অচিরেই সরকার অধ্যাদেশ জারি করে আইনটির সংশোধন সুসম্পন্ন করবে বলেও উপদেষ্টা জানান।
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসমূহের জন্য ইপিজেড শ্রম আইন সংশোধনে অংশীজনের সাথে আলোচনা চলমান রয়েছে। বিদ্যমান ইপিজেড শ্রম আইন ও সংশোধিত বাংলাদেশ শ্রম আইনের মধ্যে ফারাক বিশ্লেষণ করে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

কারখানা ও স্থাপনা পরিদর্শনের জন্য বিদ্যমান ষ্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী শতকরা পঞ্চাশ ভাগ অঘোষিত পরিদর্শন হয়ে থাকে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, পরিদর্শকের শূন্যপদসমূহে দ্রুত নিয়োগ দেয়া হবে।

অধিবেশনে দাখিলকৃত প্রতিবেদন নিয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতিনিধিরা শ্রম অধিকার উন্নয়ন ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকল্পে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রক্রিয়া দ্রুত বন্ধ করার দাবী জানান।

উল্লেখ্য, চলমান মামলায় গত পাঁচ বছর ধরে শুনানি অনুষ্ঠিত হলেও এবারই প্রথম সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জোট হিসেবে প্রথমবারের মত আরব দেশগুলোর জোট বাংলাদেশের পক্ষে অকুন্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করে। 

আরব জোট ছাড়াও স্বতন্ত্রভাবে ১৮টি দেশ বাংলাদেশের চলমান শ্রম সংস্কারের ভূয়সী প্রশংসা করে যা এযাবৎকালে অর্জিত সর্বোচ্চ সমর্থন। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী কয়েকটি দেশের প্রতিনিধি শ্রমখাত সংস্কারে সরকারের চলমান উদ্যোগগুলোকে স্বাগত জানান এবং এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

উল্লেখ্য, চলতি অধিবেশনে গভর্নিং বডির কোনো সদস্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দাবী জানায়নি।

দাখিলকৃত প্রতিবেদন ও অধিবেশনে অনুষ্ঠিত আলোচনার ভিত্তিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ বিবেচনায় সহযোগিতার উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান মামলার বিষয়ে পরবর্তী আলোচনা নভেম্বর ২০২৫ এর পরিবর্তে আগামী বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত হবে মর্মে অধিবেশনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোতে আন্তর্জাতিক মহলের অব্যাহত সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের শুভেচ্ছা সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।

এছাড়া শ্রম উপদেষ্টা শ্রম খাতের উন্নয়নে সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করার জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ত্রিপক্ষীয় দলসহ যে কোনো প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে সমাপনী বক্তৃতায় চলমান মামলাটি শীঘ্রই নিষ্পত্তি করতে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন কামনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat