সর্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা হওয়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগ শুরু করেছে সরকার। আজ রোববার প্রাথমিকভাবে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
রোববার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এই বিনিয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান অর্থমন্ত্রীর নিকট সর্বজনীন পেনশন তহবিলের বিনিয়োগে ক্রয়কৃত ট্রেজারি বন্ড আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য অতিরক্তি সচিব মো. গোলাম মোস্তফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এরই মধ্যে সর্বজনীন পেনশন তহবিলে প্রায় ১৫ হাজার ব্যক্তি চাঁদা প্রদান করেছেন। এ পর্যন্ত তাদের জমা করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আজ জমাকৃত অর্থ হতে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা মূল্যের ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড ক্রয় করে বিনিয়োগ করা হলো।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন তহবিল’ হিসাবে পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী সবার জমা করা অর্থ জমা থাকবে। এই অর্থ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নিরাপদ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ উৎসে বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ট্রেজারি বন্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
জাতীয় পেনশন স্কীম-এ অর্থ জমা করা নিরাপদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি মনে করি এটি দেশের মানুষের চাহিদার অনেকটাই মেটাতে পারবে এবং সবাই উপকৃত হবেন। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় পেনশন তহবিলের পরিমাণ ৭০০ থেকে ৮০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের উল্লেখ করে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশেও ভবিষ্যতে শক্তিশালী পেনশন তহবিল গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে অর্থবিভাগের সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, জাতীয় পেনশন স্কীম চালু করা সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো। সরকার সেই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে এবং গত আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেনশন স্কীম উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, পেনশন তহবিলে যে অর্থ জমা হচ্ছে সেটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ও নিরাপদ এবং লাভজনক ক্ষেত্রে এই অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
পেনশন স্কীম-এ অংশগ্রহণ করা নিরাপদ উল্লেখ করে সচিব আরও বলেন, অনেক সময় পেনশন তহবিলের অর্থের বিনিয়োগ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। এ নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই, এটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ও নিরাপদ। এ বিষয়টি তিনি সঠিক তথ্য দিয়ে দেশবাসীকে অবহিত করার জন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সর্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা হওয়া অর্থ বিনিয়োগ বিধিমালা হচ্ছে। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই বিনিয়োগ বিধিমালা জারি করা হবে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা দিয়ে ১০ বছর মেয়াদি যে ট্রেজারি বন্ড কেনা হয়েছে তার মুনাফার হার ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। এটা আমাদের প্রত্যাশার থেকেও বেশি।