লিবিয়ার প্রয়াত শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম আল-গাদ্দাফি (৪৯) প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গতকাল রোববার তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। গাদ্দাফি যুগের অবসানের পর লিবিয়াজুড়ে যে সংঘাত চলছে, আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনকে সেই সংঘাত থামানোর মাধ্যম মনে করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, সাইফ আল-ইসলাম লিবিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে সেবহা শহরের নির্বাচন কার্যালয় হাজির হন। সেখানে তাঁকে মনোনয়নপত্রে সই করতে দেখা যায়। একজন নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, সাইফ আল-ইসলাম প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
সাইফ আল-ইসলাম লিবিয়ার পরিচিত ব্যক্তিদের একজন। প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াইয়ের তালিকায় রয়েছেন লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক বাহিনীর কমান্ডার খলিফা হাফতার, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আবদুলহামিদ আল দিবাহ, পার্লামেন্টের স্পিকার আজুলা সালেহ।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ওই নির্বাচনে লিবিয়ার বিবদমান গোষ্ঠীগুলো ও আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো সমর্থন জানালেও নতুন সরকারের কার্যপ্রণালিবিধি, ভোটের সময়সূচিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে। ফলে ওই ভোট নির্ধারিত সময়ে হবে কি না, তা নিয়ে এখনো সন্দেহ রয়েছে। প্যারিসে এক সম্মেলনে গত শুক্রবার বিশ্বনেতারা একমত হয়েছেন যে যারা লিবিয়ার ভোটকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। যদিও ভোটের আর মাত্র ছয় সপ্তাহেরও কম সময় বাকি। এরপরও লিবিয়ার নতুন সরকারের কার্যপ্রণালিবিধি প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে মুয়াম্মার গাদ্দাফির সরকারের পতন ঘটে ২০১১ সালে। বিদ্রোহীদের হাতে আটক হওয়ার পর গাদ্দাফিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে দেশটির বিভিন্ন পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, সাইফ আল-ইসলাম ভোটের ময়দানে তাঁর বাবার শাসনামলের দিকগুলো তুলে ধরতে পারেন। তবে এর মাধ্যমে তিনি ভোটের মাঠে সামনের সারিতে আসতে পারবেন না বলে মনে হচ্ছে। কারণ, গাদ্দাফির নিষ্ঠুর শাসন এখনো অনেক লিবীয়র মনে আছে। অন্যদিকে ভোটে নিজেদের পক্ষে অনেক বেশি সমর্থকদের একত্র করা সাইফ আল-ইসলাম ও গাদ্দাফি শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পক্ষে কঠিন হবে।