পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) উপর আমরা নির্ভরশীল নয়। তাই তাদের শর্ত মেনে জাতীয় বাজেট তৈরি করা হয় না। আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে নিজেরা বাজেট তৈরি করি।
সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে "আইএমএফ' এর সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে?" বিষয়ক এক নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ারলগ (সিপিডি) ও নাগরিক প্ল্যাটফর্ম যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন,‘আমাদের বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে আইএমএফ কোন বিষয় নয়। তাদের উপর আমরা নির্ভরশীল নয়। নিজেরা বাজেট তৈরি করি, নিজেদের প্রয়োজনে।’ তিনি আরও বলেন, আইএমএফ তৈরি হয়েছিল সদস্য দেশকে সহযোগিতা করার জন্য। বাংলাদেশ নিজেদের প্রয়োজনে ঋণ নিয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সংস্থাটি কোন শর্ত দেয়নি বলে তিনি জানান।
তিনি মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বড় সমস্যা। তবে গত মাসে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমেছে। আগামীতে আরও কমবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সরকারকে আরও কাজ করে যেতে হবে।
বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, রিজার্ভ একটা চলমান ব্যাপার, বাড়বে-কমবে। তবে রিজার্ভ নিয়ে বর্তমানে কোন খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রিজার্ভ স্বস্তিদায়ক অবস্থায় রয়েছে।
পরিকলল্পনামন্ত্রী জানান, আগামী অর্থবছরের বাজেটে প্রতিবন্ধীদের ভাতার পরিমাণ বাড়বে। তবে অন্যান্য ভাতার পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকবে।
শ্রম মজুরির বিষয়ে তিনি বলেন, গত তিন বছর ধরে খুব ধীরে হলেও শ্রম মজুরি ক্রমাগতভাবে বেড়েছে। তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার বাড়াতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য বলেন, আইএমএফ-এর শর্ত পরিপালন করে বাজেট তৈরি করলে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য বেড়ে যাবে।
সিপিডি বোর্ড অব ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, বিল্ড-এর নির্বাহী পরিচালক ফেরদৌস আরা বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।