নিজস্ব প্রতিনিধি:- চীনের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণহত্যা নিয়ে হংকংয়ের একজন আন্দোলনকারীর লেখাসংবলিত প্রোফাইল ‘ফ্রেম’ ভুলবশত প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষমা চেয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ফুং কা কিং নামের হংকংয়ের ওই আন্দোলনকারী তিয়েনআনমেন স্কয়ারের গণহত্যা স্মরণে কিছু লেখা লিখে প্রোফাইল ফ্রেম বানিয়েছিলেন। কিন্তু এটি ‘ভিত্তিহীন, আতঙ্কজনক এবং একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তি, আইনি সত্তা, জাতীয়তা বা গোষ্ঠীর প্রতি আক্রমণাত্মক’—এই অজুহাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক তা প্রত্যাখ্যান করেছিল।
তবে অনেকের মতে, ফেসবুক এটা করেছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। কারণ, ২০০৯ সাল থেকে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি চীনে বন্ধ রয়েছে এবং ফেসবুক চীনে পুনরায় প্রবেশ করতে আগ্রহী। আর ১৯৮৯ সালের ৪ জুন তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শত শত সক্রিয় কর্মী হত্যার মাধ্যমে সংগঠিত গণহত্যাটি চীনে অত্যন্ত সংবেদনশীল। এমনকি চীন ওই ঘটনা স্মরণে সব ধরনের কর্মকাণ্ড এবং সমালোচনা নিষিদ্ধ করেছে। এ ছাড়া ওই ঘটনা নিয়ে অনলাইনে আলোচনার ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। তবে বিশ্বব্যাপী অন্যান্য জায়গায় বিশেষ করে হংকং এবং তাইওয়ানে প্রতিবছর ওই গণহত্যা স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। ফুং কা কিং তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, তিয়েনআনমেন থিম যোগ করা ফ্রেম অনুমোদনের জন্য ফেসবুকের কাছে জমা দিয়েছিলাম গত ২৬ মে। ছবির মধ্যে চীনা ও ইংরেজির মিশ্রণে লেখা ছিল, ‘৪ জুন, ২৮তম গণহত্যা দিবস’, ‘জুন চতুর্থ সংশোধন’ এবং ‘নিযুক্তকারী শাসন নিপাত যাক’। পরদিন শনিবার ফেসবুক জানায়, এই ছবিটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, এটি ‘একটি বিশেষ ব্যক্তি, আইনি সত্তা, জাতীয়তা বা গোষ্ঠীর প্রতি হুমকিস্বরূপ’। তবে গত সপ্তাহের শেষের দিকে এ ঘটনার জন্য ফেসবুক তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ছবিটি অনুমোদন দেয়। ফেসবুকের একজন মুখপাত্র সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছে, ‘ছবিটি ভুলভাবে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। আমরা এই ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছি এবং ছবিটি অনুমোদন দিয়েছি।’ উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাঁদের প্রোফাইল ছবিতে বিভিন্ন বার্তা এবং গ্রাফিকস ডিজাইন করতে পারছে। বিভিন্ন অর্জন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ফেসবুকের এই সুবিধাটি ব্যবহার করেছেন অনেকেই। তবে এই সুবিধাটি ব্যবহার করার আগে ফেসবুকের অনুমোদন পেতে ফ্রেমগুলো জমা দিতে হয় এবং ফেসবুক অনুমোদন দিলে তা ব্যবহার করা যায়।