বাংলাদেশ-ভারত প্রতিরক্ষা সম্পর্ক: একটি পর্যালোচনা
আন্তর্জতিক ডেস্ক:-বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সফরের পর এমনই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এটা প্রমাণিত যে দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের সফরের মধ্য দিয়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, যৌথ অনুশীলন, মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগে ত্রাণ সাহায্যের বিষয়ে পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে থেকেই অনানুষ্ঠানিকভাবেই দুই দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টি দৃশ্যমান হচ্ছিল। যদিও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ১৯৭১ সাল থেকেই বিদ্যমান। ওই সময় ভারতীয় সেনারা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারত বিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। এ সময় ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজখোয়া এবং ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অব বদোল্যান্ডের রঞ্জন ডাইমারিকে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়। এ ধরনের পদক্ষেপগুলোর মধ্য দিয়ে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি নতুন দিক উন্মোচিত হয়।
বর্তমানে একটি উষ্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত অর্থনৈতিক, সামাজিক, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করছে। ২০১৪ সালে সামুদ্রিক সীমানা বিরোধের সমাধানে উভয় দেশ একটি রেজ্যুলেশন এনেছিল। এর পরের বছর তারা স্থলভাগে সংঘাতের সমাধান করেছিল।
এছাড়া উভয় দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা নিয়মিত সফর করছেন। এর মধ্যে ২০১৩ সালের মার্চে বাংলাদেশ সফর করেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী। এরপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ভারত সফর করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এসবের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে চলমান আলোচনা একে অপরের পারস্পরিক দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে অবদান রাখছে।
এদিকে প্রতিরক্ষা সেবাগুলোর মধ্যে অনুশীলন, চিকিত্সা সহায়তা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে উভয় দেশ যৌথভাবে অংশগ্রহণ করছে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ‘সম্প্রীতি’ নামে দুই দেশের সেনাবাহিনীর যৌথ কর্মসূচি ইতোমধ্যে সাতটি রাউন্ড সম্পন্ন করেছে। সপ্তম রাউন্ডটি ২০১৭ সালের নভেম্বরে মিজোরামের ভেরেঙ্গেতে কাউন্টার-ইনসারজেন্সি অ্যান্ড জঙ্গল ওয়ারফেয়ার স্কুলে অনুষ্ঠিত হয়।
ভারতের কয়েকজন নীতি-নির্ধারণী বিশ্লেষক এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের পক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেছেন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে একটি সুসংহত সম্পর্ক গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।