
নিজস্ব প্রতিনিধি:-
এবছর আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের হাওড়াঞ্চলের বোরো ধান। এর সুযোগ নিচ্ছেন উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা। প্রতি ট্রাক চালে তারা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেশি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চাল আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
চাল আড়তদার অভিযোগ করে বলেন, আগে ৩০০ বস্তা (প্রতি বস্তা ৫০ কেজি) মিনিকেট চালের প্রতি ট্রাকে খরচ পড়ত ৬ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। একই চাল বর্তমানে ৮ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। একইভাবে বেশি দাম রাখা হচ্ছে নাজিরশাইল চালেরও। আগে এ চালের ট্রাকপ্রতি দাম ছিল ৭ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রতি ট্রাক নাজিরশাইল চাল কিনতে হচ্ছে ৮ লাখ ৭৫ হাজার থেকে ৯ লাখ টাকায়। আর ৫ লাখ ২০ হাজার টাকার বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ চাল এখন ৭ লাখ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। চাল পাইকারি ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, রাজধানী ও আশপাশের জেলায় সারা বছর উত্তরাঞ্চল থেকে চাল সরবরাহ হয়। সে তুলনায় ঢাকায় হাওড়াঞ্চলের চালের সরবরাহ অনেক কম। পুরান ঢাকার বাদামতলী এলাকার মেসার্স সুবর্ণা ট্রেডিং রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আবু হানিফ জানান, হাওড়াঞ্চলে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের সুযোগ নিয়ে উত্তরাঞ্চলের মিলাররা ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন। তারা ট্রাকপ্রতি ২ লাখ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি করছেন। আর কোনো উপায় না থাকায় মিলারদের বেঁধে দেয়া এ দামেই চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ঢাকার ব্যবসায়ীরা, যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। এ বছরের আকস্মিক বন্যায় শুধু হাওড় নয়, উত্তরাঞ্চলেও ফসলহানি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ অটো মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী। তিনি বলেন, এ বছর আকস্মিক বন্যায় শুধু হাওড়াঞ্চলই নয়, উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামসহ চারটি জেলার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা পরিদর্শন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ধান ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে এর দাম ছিল ৮০০ টাকা। এছাড়া অনেক কৃষক ধান বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। এরই প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে সরকারকে সরবরাহ বাড়াতে হবে।