বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত রোডম্যাপ তুলে ধরে ফরেন ইনভেস্টরস চ্যাম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। রোববার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এফআইসিসিআইয়ের পক্ষে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এফআইসিসিআইয়ের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের কান্ট্রি ম্যানেজার স্বপ্না ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এফআইসিসিআই সভাপতি ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী হক চৌধুরী,এফআইসিসিআই সহসভাপতি ও সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এইচ এম ফাইরুজ, স্ট্যান্ডার্ড চ্যার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনটিতে কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়নের (গ্রিন ফাইন্যান্স) মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ বিদেশী বিনিয়োগকারিদের জন্য উন্মুক্ত। আমাদের জনগনও কাজ করতে আগ্রহী। সরকার সবসময় বিনিয়োগকারিদের পাশে আছে। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির ক্রমান্বয়ে উন্নতি হচ্ছে উল্লেখ করে বিনিয়োগকারিদের বিভিন্নখাতে বিনিয়োগের আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বাংলাদেশে কর্মরত বৈশি^ক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সবচয়ে বড় ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর উল্লেখ করে তাদের বিশ^বাসীর কাছে বাংলাদেশের বিনিয়োগ সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরার আহবান জানান। তিনি বলেন,বাংলাদেশে কৃষিভিত্তিক শিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনময়। এই খাতে বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়ার সুযোগ অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র খুব কম দেশে আছে। বাংলাদেশের পারমনিবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষয়টি বৈশি^ক পর্যায়ে তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এফআইসিসিআই সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার জন্য সরকারকে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত এফআইসিসিআই। আমাদের প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবে সরকারকে জাতীয় বাজেট প্রস্তাব দিয়ে আসছে। এর কারণ শুধু রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ানোই নয়, এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য একটি ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করাও সম্ভব।’
তিনি বলেন, এফআইসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি, এতে নীতি ও সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে তাদের আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি হবে।
উদ্বোধনী অধিবেশনের পর ‘পরিবর্তিত দৃশ্যপট (চেইঞ্জিং দ্য ল্যান্ডস্কেপ)’ বিষয়ে অধিবেশেনের আয়োজন ছিল, যেখানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিইও ইয়াসির আজমান, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিইও শেহজাদ মুনিম ও এমসিসিআইয়ের সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর। তাঁরা বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জনের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ অধিবেশনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শহারিয়ার আলম, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাউকি, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাংগ কিউম ও নেদারল্যান্ড দূতাবাসের হেড অফ মিশন পাউলা রোজ বক্তব্য রাখেন।